Skip to main content

নারীর যৌনতা সংক্রান্ত সমস্যা

 



যৌনতার ব্যাপারে আলোচনা করতে গেলে যৌন সংক্রান্ত নারী এবং পুরুষের বিভিন্ন প্রকার সমস্যার বিষয়েও কিচ্ছু আলোচনার প্রয়োজন পড়ে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরও বিভিন্ন প্রকার সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এই সমস্যাগুলোর অধিকাংশই নারীর যৌন জীবনের উপর প্রভাব ফেলে। এটি বলা উচিত যে যৌনতার ব্যাপারে যে কোনো প্রকার সমস্যা হলো তা দীর্ঘস্থায়ী যৌন সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
যৌনতার বিষয়ে নারীর প্রধান সমস্যা হলো যৌনমিলনের ব্যাপারে অনীহা। নারীর যৌনতার বিষয়ে এই অনাগ্রহের বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। নারীর শারীরিক কোনো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা থেকে থাকলে তা নারীকে যৌন বিমুখ করে তুলতে পারে। আবার মানসিক কোনো অসুবিধা নারীকে যৌনতার ব্যাপারে নিরুৎসাহ যোগায়। শৈশবকালীন মানসিক বা শারীরিক যৌন উৎপীড়ন অনেক ক্ষেত্রে নারীকে যৌন নানা সমস্যার সম্মুখীন করে তোলে। আবার প্রচুর পরিমানে স্বমেহন নারীর যৌনানুভূতিকে তিগ্রস্ত করতে পারে। পুরুষের ক্ষেত্রে ও অনেক সময় হস্তমৈথুনের মাত্রাতিরিক্ত প্রভাবে পুরুষের যৌন জড়তা দেখা দিতে পারে। যা কোনো কোনো সময় পুরুষত্বহীনতা পর্যন্ত গড়াতে পারে।
যৌন গবেষকরা গবেষনা করে দেখছেন যে, নারী যৌনতা বিষয়ক সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয় মূলত যৌন অনিচ্ছা থেকেই। নারীর সমস্যার মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো যৌনমিলনের সময়ে নারীর যৌনাঙ্গে ব্যথা। কোনো কোনো নারী এই ব্যথার তীব্রতার জন্য যৌনমিলনকে ভয়ের চোখে দেখে।
যৌনমিলনে এরকম ব্যাথার ডাক্তারী নাম হলো ডিসপ্যারুনিয়ার দুটো কারণ থাকতে পারে। একটি কারণ হলো শারীরিক এবং অপরটি হলো মানসিক।
ডিসপ্যারুনিয়া:
এটি নারীদের একটি যৌন সমস্যা। একে ব্যথাযুক্ত যৌনমিলন সমস্যাও বলা হয়। তবে ডিসপ্যারুনিয়া পুরুষেরও হতে পারে। নারীর ডিসপ্যারুনিয়ার কিছু উপসর্গ হলো:-
১.লিঙ্গ প্রবেশের সময় যৌনিতে ব্যথা।
২.তলপেটে ব্যথা।
৩.ঘন ঘন লিঙ্গ সঞ্চালনের সময় নারী প্রচণ্ড ব্যথা পেতে পারে।
৪.যৌনমিলনের ব্যাপারে ভীতির সৃষ্টি।
কারণ:-
গাইনোকলজিক্যাল এবং সাইকোলজিক্যাল কারণে ডিসপ্যারুনিয়া হতে পারে। যৌনির ভেতরে এবং বাইরে দুই প্রকার সমস্যা এ সময় দেখা দেয়। এছাড়াও শারীরিক বিভিন্ন কারণে যৌনমিলনের সময় নারীর যোনিতে ব্যথার সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো-
১. পেলভিক ইনফেকশন।
২. পেলভিক ইনফামেটরি অসুখ।
৩. ও ভারীর অস্বাভাবিক অবস্থা।
৪. সারভিঙের ইনফেকশন অথবা প্রদাহ।
৫. ভালভোভ্যাজিনাইটিস সমস্যা।
৬. বার্থোলিন গ্ল্যান্ডের ইনফেকশন অথবা প্রদাহ।
৭. যোনির ত্বকের প্রদাহ।
৮. এন্ডোমেট্রোসিস জাতীয় সমস্য।
৯. যোনির শুষ্কতা।
১০. যোনিতে টিউমার হওয়া।
১১. যোনিতে অন্য কোনো প্রকার ক্ষত।
আবার মানসিক নানা কারণে ও যৌনমিলনের সময় নারীর যোনিতে ব্যথার উদ্রেক হতে পারে। এই কারণগুলোর মধ্যে যৌন শীতলতা, যৌনতা সর্ম্পকে কুসংস্কার,ধর্মীয় কুসংস্কারের প্রভাব, যৌন অজানা বিষয় এবং শৈশবকালীন বা পরবর্তী সময়ে যৌন নিপীড়িত হলে নারীর যৌনমিলন কালীন ব্যথার সৃষ্টি বা ডিসপ্যারুনিয়া হতে পারে। যোনির বাইরে যে কারণে সমস্যা হয় তা হলো-
১.সতীচ্ছেদ ছিঁড়ে যাওয়া।
২.এপিসিওটমিক ছিঁড়ে যাওয়া।
৩.বার্থোলিন গ্ল্যান্ডের স্ফীতি।
৪.কিটোরিসে ব্যথা।
এছাড়াও যোনির ভেতরে যে কারণে ব্যথার সৃষ্টি হয় সেগুলো হলো-
১.পর্যাপ্ত পিচ্ছিলতা না থাকা।
২.যোনির ইনফেকশন।
৩.যোনিতে সেপ্র বা ফোমের ব্যবহার।
৪.সেনাইল ভ্যাজিনিটিস।
অন্যান্য কারণ-
১.ইউটেরাইন লিগামেন্ট ছিড়ে যাওয়া।
২.পেলভিক ইনফেকশন।
৩.যোনির স্ফীতি।
৪.মূত্রথলির সমস্যা।
৫.ধর্মীয় চাপ।
৬.তিক্ত যৌন ইতিহাস।
৭.পিচ্ছিলতা কমে যাওয়া ইত্যাদি।
চিকিৎসা:
মনোদৈহিক বা শারীরিক যে কারণেই ডিসপ্যারুনিয়া হোক না কেন একে যদি নিরীণ করা যায় তবে এই সমস্যাকে ওষুধে সারিয়ে তোলা সম্ভব। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ বিষয়টি ঘটে তা হলো যোনির শুষ্কতা। যৌনমিলনের প্রথম দিকে যোনির এই সমস্যার জন্য অনেক নারী যোনিতে ব্যথা অনুভব করে। অনেক নারীর যোনি অধিক পরিমানে শুষ্ক থাকে। শারীরিক কোনো কারণে যদি ডিসপ্যারুনিয়া হয়ে থাকে তবে এর জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।


Comments

Popular posts from this blog

পুরুষের উত্থান ত্রুটি কেন হয় প্রতিকার কী?

  পুরুষের উত্থান ত্রুটি কেন হয় প্রতিকার কী? ইরেকটাইল ডিজফাংশন বা পুরুষের উত্থান ত্রুটিকে সহজ ভাষায় বলা হয় যৌন অক্ষমতা বা দুর্বলতা। পুরুষদের জন্য খুবই স্পর্শকাতর একটি বিষয় এটি। যৌনমিলনের পূর্বশর্ত পুরুষাঙ্গের যথাযথ উত্থান। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, মিলনের পূর্বে পুরুষের লিঙ্গের পর্যাপ্ত উত্থান ঘটছে না কিংবা ঘটলেও বেশিক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না। ফলে পরিপূর্ণ ও সফল যৌনমিলনও সম্ভব হচ্ছে না।  এ ধরনের সমস্যায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন দম্পতি। আবার সংকোচ ও দ্বিধার কারণে চিকিৎসকের কাছে যান না বাজারচলতি চটকদার বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে কবিরাজি হারবাল বা টোটকা চিকিৎসা নিয়ে আরও জটিলতায় পড়েন। তাই সংকোচ ভেঙে এ সমস্যা নিয়ে সঠিক পরামর্শ নিতে হবে।  প্রথমেই জানা যাক কেন হয় ইরেকটাইল ডিজফাংশন। পুরুষের লিঙ্গের উত্থান মূলত যৌন উদ্দীপনার সঙ্গে সম্পর্কিত। আর পুরুষের যৌন উদ্দীপনা খুবই জটিল একটি প্রক্রিয়া, যেটির সঙ্গে সরাসরি সংযোগ রয়েছে তাদের মস্তিষ্ক, হরমোন, আবেগ, স্নায়ু, পেশি ও রক্ত সংবহনতন্ত্রের। এগুলোর যেকোনো একটির সমস্যা বা অস্বাভাবিকতার কারণে ইরেকটাইল ডিজফাংশন হয়ে থাকতে পারে। এ ছাড়া মানসিক চাপ, বিষণ্ন...

সিফিলিস মারাত্মক যৌন রোগ

  সিফিলিস মারাত্মক যৌন রোগ: সিফিলিস প্রধান যৌন রোগগুলোর মধ্য অন্যতম। এটি একটি জটিল যৌন সংক্রামক রোগ। পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ১২ মিলিয়ন মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়। এ রোগ দেহে দীর্ঘকালীন জটিলতা দেখা দেয়। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না করালে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। আমাদের দেশে এ রোগের প্রভাব ব্যাপক, বিশেষ করে শহর এলাকায় রোগটি সচরাচর দেখা যায়। বন্দরনগরী ও শিল্পনগরীতে এ রোগটি সাধারণত দেখা যায়। সংক্রমণের উৎস কী : আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বক ও শ্লেষ্মাঝিল্লির ক্ষত, ক্ষত হতে নিঃসৃত রস, লালা, যোনি থেকে নিঃসৃত রস, যোনি থেকে নিঃসৃত রক্ত, বীর্য আক্রান্ত ব্যক্তির ঠোঁট ও মুখ। কিভাবে সংক্রমিত হয় : আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে সৃষ্ট সিফিলিটিক ক্ষত এর সরাসরি সংস্পর্শে এলে জনান্তরে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সরাসরি যৌনমিলন করলে। অনিরাপদ যৌনি মিলন, বিশেষ করে পায়ুপথে যৌন মিলন কিংবা মুখ মৈথুন কিংবা চুম্বন বিনিময় করলে। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে রক্ত গ্রহণ করলে। রক্তসঞ্চালন বা ইনজেকশনের মাধ্যমে ও এ রোগ ছড়ায়। আক্রান্ত মা সন্তান জন্মদানের আগেই শিশুর দেহে বিস্তার ঘটিয়ে দেন। আক্রান্ত মায়ের দুধ পান করলে। বিশেষ...

সঙ্গমের স্থায়িত্ব কতক্ষণ?

  সঙ্গমের স্থায়িত্ব কতক্ষণ?  পুরুষ-নারীর মধ্যে যৌন মিলনে বাড়তি উন্মদনা কে না চায়। রতিক্রিয়ায় সঙ্গী পারদর্শী না হলে এর চেয়ে দুঃখের বোধ হয় আর কিছুই হতে পারে না ৷ ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব সেক্সুয়াল মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণার ফলাফলে পাওয়া গেছে যে- সর্বোত্তম যৌন মিলনের সময়-ব্যপ্তি ৭ থেকে ১৩  মিনিট পর্যন্ত হয় ৷  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিশেষজ্ঞরা এই তথ্য দিয়েছেন যে বেস্ট সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স ৭-১৩ মিনিটের  ভিতর হয়। সমীক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলেছেণ ৩ মিনিটের  সেক্স  পর্যাপ্ত সময় হয় ৷ এই গবেষণা করা হয়েছিল পেনিট্রেটিব সেক্সের ক্ষেত্রে আদর্শ সময় কি এটা নির্ণয় করার জন্য৷ এজন্য আমেরিকান এবং কানাডিয়ান  যুগলদের রান্ডম সিলেকশানের মাধ্যমে প্রশ্ন করা হয়। তাদের সবার উত্তর  ছিল - ৭ থেকে ১৩  মিনিটের যৌন মিলন 'কাম্য বা বাঞ্চনীয়'। অন্য একটি গবেষনা মতে - যৌনবিষয়ে সঠিক শিক্ষা, অঞ্চল, চামড়ার রঙ এবং শারীরিক আকারের পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে যৌনমিলনে সময়-ব্যপ্তির তারতম্য দেখা যায়। দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলি যেমন- বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার (বাদামী চা...